হযরত ইয়াকুব ও হযরত ইউসুফ (আ.)-এর পুনর্মিলন

প্রতিদিনের ইসলামী পোস্ট - Get Study Online

হযরত ইয়াকুব ও হযরত ইউসুফ (আ.)-এর পুনর্মিলন: কুরআনের অসাধারণ ঘটনা

হযরত ইয়াকুব (আ.) তাঁর প্রিয় পুত্র হযরত ইউসুফ (আ.)-এর কামীছের বরকতে দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধার করেন। ফজরের নামাজ শেষে তিনি আল্লাহর দরবারে সন্তানদের জন্য দু’আ করলেন, যা সঙ্গে সঙ্গেই কবুল হয়। আল্লাহ তা’আলা ওহীর মাধ্যমে তাঁকে জানিয়ে দিলেন যে, তাঁর সন্তানদের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়েছে।

পুনর্মিলন: হযরত ইয়াকুব ও হযরত ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)

এদিকে, হযরত ইউসুফ (আ.) তাঁর পিতাকে ও পরিবারকে মিসরে নিয়ে আসার জন্য ২০০ ঘোড়সওয়ার ও মূল্যবান উপহার পাঠান। হযরত ইয়াকুব (আ.) পরিবারের ৭২ জন সদস্যকে নিয়ে মিসরের পথে রওয়ানা হন।

হযরত ইয়াকুব ও হযরত ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) ঘটনা

যখন তাঁদের কাফেলা মিসরের নিকট পৌঁছায়, তখন হযরত ইউসুফ (আ.) হাজারো সৈন্য নিয়ে অভ্যর্থনার জন্য এগিয়ে আসেন। এই দৃশ্য দেখে হযরত ইয়াকুব (আ.) মনে করেছিলেন এটি ফিরাউনের বাহিনী। কিন্তু পুত্র ইয়াহুদা জানান, এটি তাঁরই সন্তান হযরত ইউসুফ (আ.)-এর বাহিনী।

একই সময় জিব্রাইল (আ.) এসে জানালেন যে, ফিরিশতাগণও এই আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ করছেন। ফিরিশতাদের জিকির, ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ এবং সৈন্যবাহিনীর গগনবিদারী স্লোগানে চারদিক মুখরিত হয়ে ওঠে।

আরো পড়ুন : প্রতিদিনের ইসলামিক গল্প – অকালের ফল

পিতা-পুত্রের এই পুনর্মিলনের মুহূর্তটি ছিল মোহররমের দশ তারিখ। যখন হযরত ইয়াকুব (আ.) ও হযরত ইউসুফ (আ.) সামনাসামনি হলেন, ইউসুফ (আ.) সালাম পেশ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জিব্রাইল (আ.) তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, পিতাকে আগে সালামের সুযোগ দিতে হবে। তখন হযরত ইয়াকুব (আ.) বললেন, “হে দুঃখ লাঘবকারী, আস্সালামু আলাইকুম।”

পিতা-পুত্র কোলাকুলি করে ক্রন্দন করলেন। পরে, সুসজ্জিত অভ্যর্থনা শিবিরে বিশ্রামের পর তাঁরা রাজপ্রাসাদে পৌঁছান। সেখানে হযরত ইউসুফ (আ.) সিংহাসনে বসে পিতামাতাকে পাশে বসান।

এই দৃশ্য দেখে হযরত ইয়াকুব (আ.) ও তাঁর সন্তানরা ইউসুফ (আ.)-এর সম্মানে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। এভাবেই ইউসুফ (আ.)-এর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়, যেখানে তিনি দেখেছিলেন, চাঁদ, সূর্য ও এগারটি তারকা তাঁকে সিজদা করছে। (সূরা ইউসুফ, ১৩ পারা, ৫ম আয়াত)

সবক:

  • মা-বাবার সম্মান ও ইজ্জত রক্ষা করা প্রত্যেকের কর্তব্য।
  • তাজিমী সিজদা তাঁদের শরীয়তে বৈধ হলেও আমাদের শরীয়তে তা নিষিদ্ধ। তবে, মুছাফাহা, কোলাকুলি এবং হস্তচুম্বন বৈধ।

Related posts

Leave a Comment